অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশনের জন্য দলীয় প্রস্তাব চূড়ান্ত করার পথে এগিয়েছে বিএনপি। তাদের প্রস্তাবে সংবিধান, নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ বিভাগের সংস্কারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বিএনপির প্রস্তাবে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রতিষ্ঠা, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনা এবং এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী না থাকার বিধান।

গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবসমূহ:
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় দলীয় সংস্কার কমিটিগুলোর কাজের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, সংবিধান সংস্কারে তারা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারকে মূলনীতি হিসেবে সংযোজনের প্রস্তাব করছে। তবে আনুপাতিক নির্বাচনপদ্ধতি গ্রহণের ব্যাপারে তারা আগ্রহী নয়।

বিএনপির ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবের আলোকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃস্থাপন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত হচ্ছে।

সংস্কার কমিশনগুলোর কাজ:
বিএনপি ইতোমধ্যে সংবিধান, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার নিয়ে ছয়টি আলাদা কমিটি গঠন করেছে। সংবিধান সংস্কার কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এবং নির্বাচন কমিশন সংস্কারে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আবদুল মঈন খান। পুলিশ সংস্কার কমিটির প্রতিবেদন ইতোমধ্যে জমা পড়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা:
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের পরিকল্পনা করছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সরকারের দাবি, এই কমিশনগুলোর প্রতিবেদন ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দেওয়া হবে।

নতুন নির্বাচন কমিশন:
এদিকে, বৃহস্পতিবার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। সাবেক সচিব এ এস এম মো. নাসির উদ্দীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে শপথ নেবেন।

রাজনৈতিক অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ:
বিএনপি ও মিত্ররা চায় নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার শেষ করেই নির্বাচন আয়োজন করা হোক। তবে, কিছু দল সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের তাড়াও দিচ্ছে।

এ সংস্কার প্রক্রিয়া রাজনৈতিক দলগুলোর ভবিষ্যৎ অবস্থান ও নির্বাচনী প্রস্তুতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।